স্বপ্ন নয় শান্তিই ছিল সেদিন
ক্রিকেট পাগল ছেলে। বড় হয়ে
ক্রিকেট খেলোওয়াড় হবে এই তাঁর সমস্ত ভাবনা চিন্তা । কিন্তু
মা তাকে নিয়ে নিত্য নতুন স্বপ্ন দেখে ছেলে ডাক্তার বা ইঞ্জিয়ার হবে। ছেলের এসব
পছন্দ না রাত দিন স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে সাকিব আল হাসানের মত খেলোওয়াড় হবে। সাকিবের
ছবি কেটে কেটে বই ঘরের দেওয়াল ভরিয়ে রাখে। মা সরাসরি
সমারথন না করলেও ছেলের সপ্নের কাছে হার মানে এক সময়। ছেলেকে
বকাবকি করলেও সন্ধ্যায় তাঁর খেলার ব্যাট বল গুলো ভাল করে গুছিয়ে রাখে। ছেলে মনোযোগ
দিয়ে খেলা চালিয়ে যায়। মাঝে মাঝে রাতে স্বপ্নও দেখে ৬ হাঁকিয়েছে। এভাবেই
সে তাঁর স্বপ্ন পুরনের জন্য পরিশ্রম করে অনুশীলন করে বেশি বেশি করে। মা তার স্বপ্ন পূরণের জন্য ছেলেকে শহরে
পাঠিয়েছে আর ছেলে তার স্বপ্ন পূরণের আরও একধাপ এগিয়ে আসার আনন্দে উচ্ছ্বাসিত । শহরে আসার
পর বিভিন্ন ক্লাবে ক্লাবে ঘুরতে থাকে ভর্তি হওয়ার জন্য । কিন্তু
সব ক্লাবে প্রায় একই অবস্থা ভর্তি ফি খেলার সরঞ্জজাম কিনতে লাগবে অনেক টাকা যেটা তার
বা মায়ের দেয়ার সমার্থ নেই। দিনশেষে মন খারাপ করে বাসায় ফিরে আসে। ক্লান্ত
শরীর নিয়ে চিন্তা মগ্ন হয়ে বাসায় ফিরে একটি ফোন কল পেল ১০ দিন পর প্রাইমারি বাছাই ২৫০০০
টাকা সেদিন দিতে হবে। ফোন
কেটে দিয়ে ভাবলো মায়ের কাছে মিথ্যা কথা বলে টাকা নিবে। কথামত সন্ধ্যায় এসে কাঁদো কাঁদো গলায় মাকে
ফোন দিয়ে টাকার কথা বলতেই মা কেমন যান ইতস্তত হয়ে গেল। মা ঃ বাবা
তুই তো জানিস আমাদের অবস্থা
এইভাবে টাকার চাপ দিলে কিভাবে দিব বল। কোন কোথায়
শুনতে রাজি না ছেলে টাকা তাকে দিতে হবে। কোন রকম
ছেলেকে বুঝিয়ে মা ফোন কেটে দিয়ে
দিশেহারা হয়ে ভাবতে শুরু করলো। যতই দিন
কাছে আসে ততবেশি মা ছেলে ভাবনায় পড়ে যায়।
মাকে টাকার জন্য খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করতে থাকে কিন্তু মা সঠিক
উত্তর দিতে পারে না আসলেই সে টাকা দিতে পারবে কিনা। ছেলের অস্থিরতা
বাড়তে থাকে দিন ঘনিয়ে আসছে কিন্তু হাতে কোন
টাকা নেই । এটাই তার জন্য শেষ সুযোগ স্বপ্ন পূরণের টাকা যেভাবে হোক মায়ের
কাছ থেকে নিতে হবে। নির্ধারিত দিনের ৩ দিন আগে বাড়ীর ফোন সে মায়ের কাছে ফিরে গেল। গ্রামে
ফিরে সে জানতে পারে তার মা টাকার জন্য অনেক জায়গায় গিয়েছে কিন্তু কেও টাকা টাকা দেয়নি
বরং বেশি কথা বলেছে। সেই চিন্তাই তার মা শয্যাশায়ী, চিন্তায় চিন্তায় মায়ের অবস্থা খুব খারাপ।
মায়ের পাশে
কান্নাকাটি করে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছে ,ছেলে মাকে নিয়ে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যায় মা
কিছুটা সুস্থ হলে নিজের স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে পাশের বাড়ীর চাচার সাহায্যে মায়ের মুখে
হাসি ফোটাতে চলে যায় পরদেশে।
কোন মন্তব্য নেই