‘৭ মার্চের অমর কাব্য’
আঁচড়েঃ মনোয়ার আলী

......
৭ মার্চ দুপুরের পর বাবা রেডিও নিয়ে বারান্দায় এসে বসলেন। আগে থেকেই ঘোষণা ছিল বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সরাসরি রেডিও-টিভিতে প্রচার করা হবে। পরিস্থিতি এতটাই টানটান ছিল যে পাড়া-প্রতিবেশিরা অনেকেই এসেছিলেন ভাষণ শুনতে। সবার মধ্যে উত্তেজনা, কি বলতে পারেন শেখ মুজিব! কিন্তু অচিরেই সব কিছু গভীর হতাশায় নিমজ্জিত হলো। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচারিত হল না, ভাষণ দিতে পেরেছেন কিনা তাও জানা গেল না এবং এক সময় সবাইকে বিমূঢ় করে দিয়ে রেডিও স্তব্ধ হয়ে গেল।কি হল, কি হতে পারে এমন দু চারটে মৃদু মন্তব্য ছাড়া কেউ কোনো কথা বলল না, একটা অশুভ ছায়া যেন সবাইকে গ্রাস করল।
এভাবে হঠাৎ রেডিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল। আমি সুইটহাউজে এলাম, সেখানে তখন অনেকেই ছিল, কিন্তু কারো কাছে কোনো তথ্য ছিল না। কাছেই আওয়ামী লীগ অফিস, দল বেঁধে সেখানে গেলাম। ট্রানজিস্টর ঘিরে দু-চারজন নেতা কর্মী ক্রমাগত নব ঘুরিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু ঢাকার কোনো খবর নেই।জিজ্ঞাসা করলাম- টেলিফোনে কিছু জানা যায় নি?
- না, মোমিন ভাইয়ের বাড়িতে টেলিফোনের কাছে লোক বসে আছে। তবে ঢাকায় কেউ ধরছে না। যে দু-একটা বাড়িতে বাড়িতে যোগাযোগ হয়েছে তারা মহিলা, বিশেষ কিছু জানেন না, পুরুষরা সবাই রেসকোর্স ময়দানে।আমরা অফিস থেকে বেরিয়ে পথে নামতেই বিষ্ময়ের সাথে দেখলাম বিনয় চট্টপাধ্যায়, সৈয়দ ঈসাসহ কয়েকজন ছাত্র উত্তেজিতভাবে হৈচৈ করতে করতে এগিয়ে আসছে। বিনয় বলল- বস, সর্বনাশ যা হবার তাতো হয়েই গেল, শেখ মুজিব সারেন্ডার করে বসেছে। শুনেছো নিশ্চয় সভা-টভা কিছুই হয়নি। বিনয় ছাত্রলীগের এবং সৈয়দ ঈসা চীনপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ছিল। বিনয় ভালো কর্মী, কিন্তু কোনো কিছুই তলিয়ে দেখতে সমর্থ ছিল না। সৈয়দ ঈসার সাথে তাকে দেখে সন্দেহ হলো, বললাম হৈচৈ বন্ধ কর, বল কোথা থেকে এ সংবাদ পেলে। রেডিও বন্ধ, ঢাকায় টেলিফোন ধরছে না কেউ, অথচ তোমরা দিব্যি খবর পেয়ে গেছো! আমার কণ্ঠস্বর কঠিন ছিল, বিনয় থতমত খেয়ে সৈয়দ ঈসার দিকে তাকালো। ঈসা বিদ্রুপের সুরে বলল- সৈয়দ সাহেব, এটা বোঝা কি খুব কঠিন যে তোমার লিডার সব কেঁচিয়ে দিয়েছে। মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত- একজন পেটি বুর্জেোয়া নেতা আর কদ্দুর যাবে।বক্তৃতা শুনেছো?- আমার কথা বাদ দাও, তুমি শুনেছো কিনা সেটাই বলো।
- না, মোমিন ভাইয়ের বাড়িতে টেলিফোনের কাছে লোক বসে আছে। তবে ঢাকায় কেউ ধরছে না। যে দু-একটা বাড়িতে বাড়িতে যোগাযোগ হয়েছে তারা মহিলা, বিশেষ কিছু জানেন না, পুরুষরা সবাই রেসকোর্স ময়দানে।আমরা অফিস থেকে বেরিয়ে পথে নামতেই বিষ্ময়ের সাথে দেখলাম বিনয় চট্টপাধ্যায়, সৈয়দ ঈসাসহ কয়েকজন ছাত্র উত্তেজিতভাবে হৈচৈ করতে করতে এগিয়ে আসছে। বিনয় বলল- বস, সর্বনাশ যা হবার তাতো হয়েই গেল, শেখ মুজিব সারেন্ডার করে বসেছে। শুনেছো নিশ্চয় সভা-টভা কিছুই হয়নি। বিনয় ছাত্রলীগের এবং সৈয়দ ঈসা চীনপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ছিল। বিনয় ভালো কর্মী, কিন্তু কোনো কিছুই তলিয়ে দেখতে সমর্থ ছিল না। সৈয়দ ঈসার সাথে তাকে দেখে সন্দেহ হলো, বললাম হৈচৈ বন্ধ কর, বল কোথা থেকে এ সংবাদ পেলে। রেডিও বন্ধ, ঢাকায় টেলিফোন ধরছে না কেউ, অথচ তোমরা দিব্যি খবর পেয়ে গেছো! আমার কণ্ঠস্বর কঠিন ছিল, বিনয় থতমত খেয়ে সৈয়দ ঈসার দিকে তাকালো। ঈসা বিদ্রুপের সুরে বলল- সৈয়দ সাহেব, এটা বোঝা কি খুব কঠিন যে তোমার লিডার সব কেঁচিয়ে দিয়েছে। মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত- একজন পেটি বুর্জেোয়া নেতা আর কদ্দুর যাবে।বক্তৃতা শুনেছো?- আমার কথা বাদ দাও, তুমি শুনেছো কিনা সেটাই বলো।
- আরে শুনব কি! রেডিওই তো বন্ধ।
কোন মন্তব্য নেই